মূল: ড: জি, এফ, হাদ্দাদ দামেশ্কী
অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন
আরবী ও অনলাইন সেট-আপ: মুহাম্মদ রুবাইয়েৎ বিন মূসা
‘আল মদদ’=সাহায্য
করুন!
এই মদদ হযরত মূসা আলাইহিস সালাম তাঁর জাতির মধ্যে জনৈক ব্যক্তির কাছ থেকে ‘এসতেগাসা’ শব্দটি ব্যবহার করে চেয়েছিলেন, যা কুরআন মজীদে বর্ণিত হয়েছে –
فَاسْتَغَاثَهُ الَّذِي مِنْ
شِيعَتِهِ عَلَى الَّذِي مِنْ عَدُوِّهِ فَوَكَزَهُ مُوسَى فَقَضَى عَلَيْهِ.
-
তিনি সাহায্য চেয়েছিলেন। [১]
একইভাবে
যুলকারনাইন আলাইহিস সালাম-ও
فَأَعِينُونِي بِقُوَّةٍ أَجْعَلْ بَيْنَكُمْ
وَبَيْنَهُمْ رَدْمًا.- “আঈনূনী” (আমায় সাহায্য করুন) [২] বলেছিলেন, যা সূরা ফাতিহায় ব্যবহৃত “نَسْتَعِينُ’ শব্দের একই মূল (শব্দ) থেকে এসেছে।
চাহিদা
পূরণের জন্যে বা প্রয়োজন মেটানোর উদ্দেশ্যে অদৃশ্য সাহায্যকারীকে আহ্বান করার
প্রমাণ হিসেবে নিচে কিছু শরয়ী দলিল পেশ করা হলো:
(১) আল-বুখারীর সহীহ্ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে
যে আমাদের মা হাজেরা যখন সাফা ও মারওয়া পাহাড় দুটোর মধ্যে পানির জন্যে ছুটোছুটি
করছিলেন, তখন তিনি একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়ে
উচ্চস্বরে বলে ওঠেন,
فَقَالَتْ: قَدْ أَسْمَعْتَ
إِنْ كَانَ عِنْدَكَ غِوَاثٌ، فَإِذَا هِيَ بِالْمَلَكِ عِنْدَ مَوْضِعِ زَمْزَمَ.
-
ওহে, আমায় যে কণ্ঠস্বর শুনিয়েছো। যদি এখানে কোনো
গাউস(সাহায্য/সাহায্যকারী) তোমার সাথে থেকে থাকে, তবে
আমায় সাহায্য করো! এমতাবস্থায়, যমযম
ফোয়ারার স্থানে একজন ফেরেশতা আবির্ভূত হন। [৩]
(২) আবু ইয়া’লা, ইবনুল সুন্নী এবং তাবরানী নিজ প্রণীত আল-মু’জামূল কবীর গ্রন্থে বর্ণনা করেন রাসূলে খোদা সাল্লাল্লাহু অলাইহিস ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস, যিনি এরশাদ করেন:
إِذَا أَضَلَّ أَحَدُكُمْ شَيْئًا أَوْ أَرَادَ أَحَدُكُمْ
عَوْنًا وَهُوَ بِأَرْضٍ لَيْسَ بِهَا أَنِيسٌ، فَلْيَقُلْ: يَا عِبَادَ اللهِ
أَغِيثُونِي، يَا عِبَادَ اللهِ أَغِيثُونِي، فَإِنَّ لِلَّهِ عِبَادًا لَا
نَرَاهُمْ " وَقَدْ جُرِّبَ ذَلِكَ.
-
তোমাদের মধ্যে কেউ
কোনো কিছু হারালে ও সাহায্য বা সাহায্যকারী (গাউস)-এর খোঁজ করলে এবং সে বন্ধুহীন
এমন কোনো দেশে থাকলে, সে যেন উচ্চস্বরে বলে: ‘হে আল্লাহর বান্দাগণ! আমাকে সাহায্য করুন’ (ইয়া ইবাদাল্লাহি, আগিসুনী); কেননা নিশ্চয় আল্লাহর এমন কিছু বান্দা আছেন যাদের কেউ দেখতে পায় না।[৪]
আল্
হায়তামী তাঁর মজমাউল যাওয়াইদ গ্রন্থে (১০:১৩২) বলেন,
وَرِجَالُهُ
وُثِّقُوا.
-
এ হাদীস বর্ণনাকারীদের সনদ (পরম্পরা) নির্ভরযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে। [৫]
অপর এক বর্ণনায় আছে-
(৩) হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা-এর কাছ থেকে ইমাম বায়হাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর “কিতাবুল আদাব’ (পৃষ্ঠা ৪৩৬) গ্রন্থে এবং হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে দ্বিতীয় একটি মওকুফ সনদে “শুআবুল ঈমান” গ্রন্থে এবং হযরত ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে তৃতীয় আরেক সনদে ‘হায়াতুল আম্বিয়া বা’দা ওয়াফাতিহীম’ (পৃষ্ঠা ৪৪) গ্রন্থে বর্ণনা করেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু অলাইহিস ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস, যিনি এরশাদ ফরমান-
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
قَالَ إِنَّ لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ
مَلَائِكَةً فِي الْأَرْضِ سِوَى الْحَفَظَةِ
يَكْتُبُونَ مَا يَسْقُطُ مِنْ وَرَقِ الشَّجَرِ، فَإِذَا أَصَابَ
أَحَدَكُمْ عَرْجَةٌ فِي الْأَرْضِ لَا يَقْدِرُ فِيهَا عَلَى الْأَعْوَانِ
فَلْيَصِحْ، فَلْيَقُلْ: عِبَادَ اللهِ أَغِيثُونَا أَوْ أَعِينُونَا رَحِمَكُمُ
اللهُ، فَإِنَّهُ سَيُعَانُ.
-
কেরামান কাতেবীন (দুই কাঁধে অবস্থিত হিসেব রক্ষক) ফেরেশতা দু জন ছাড়াও আল্লাহ্ তা’লা পৃথিবীতে আরও
ফেরেশতা পাঠিয়েছেন যাঁরা মাটিতে পাতা পড়লে তারও হিসেব রাখেন। অতএব, মরুতূমিতে কেউ যদি অচল হয়ে পড়ে সে যেন উচ্চস্বরে বলে: আঈনু
ইবাদাল্লাহ্ রাহিমাকুম আল্লাহ (অর্থাৎ, ওহে আল্লাহর
বান্দাগণ! আমাকে সাহায্য করুন; আল্লাহ আপনাদের প্রতি অনুগ্রহ করুন); নিশ্চয় আল্লাহ চাইলে তাকে সাহায্য করা হবে। [৬]
ইমাম ইবনে হাজর তাঁর কৃত ‘আল আমলী’ গ্রন্থে এ সনদকে নির্মল اِسْنَادُهُ حَسَنٌ )
(বলেছেন।
হাদীসটি হাসান সনদে তাবরানী তাঁর ‘আল কবীর’ পুস্তকে (ইবনে হাজর কৃত ‘আল আমলী’ অনুযায়ী) ও আল হায়তামী (১০:১৩২) এবং আল বাযযার (#৩১২৮)-এর মতানুযায়ী নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের সনদে বর্ণিত
হয়েছে যা শওকানীর তোহফাতুয্ যাকেরীন (পৃষ্ঠা ২১৯ = পৃষ্ঠা ১৫৫-১৫৬) পুস্তকে এবং ইবনে আবি শায়বা (৭:১০৩)-তেও উদ্ধৃত
হয়েছে।
(৪) ইবনে আবি শায়বা তাঁর প্রণীত ‘মুসান্নাফ’ গ্রন্থে
আবান ইবনে সালেহ থেকে বর্ণনা করেন যে মহানবী সাল্লাল্লাহু অলাইহিস
ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-
إِنَّ لِلَّهِ مَلَائِكَةً
فَضْلًا سِوَى الْحَفَظَةِ يَكْتُبُونَ مَا سَقَطَ مِنْ وَرَقِ الشَّجَرِ، فَإِذَا
أَصَابَتْ أَحَدَكُمْ عَرْجَةٌ فِي سَفَرٍ فَلِيُنَادِ أَعِينُوا عِبَادَ اللَّهِ
رَحِمَكُمُ اللَّهُ .
-
তোমাদের মধ্যে কেউ
মরুভূমিতে নিজের কোনো পশু বা উট হারালে আর সেখানে কারো দেখা না পেলে, সে যেন বলে: হে আল্লাহর বান্দাগণ! আমায় সাহায্য করুন (ইয়া
ইবাদাল্লাহী আঈনূনী)! নিশ্চয় তাকে সাহায্য করা হবে। [৭]
আয্
যাহাবী তাঁর লিখিত বাতেল মতবাদ খণ্ডনমূলক বই ’আল ফাজর আস্ সাদিক’-এ লিখেন: “হাদীসগুলোতে উদ্ধৃত আল্লাহর বান্দা বলতে
শুধু জীবিত ফেরেশতা , মুসলমান জিন বা অদৃশ্য জগতের মানুষ
বুঝিয়েছে এমন কথা কোথাও বলা হয় নি। হাদীসে বেসালপ্রাপ্ত ওলী বুযূর্গদের সাহায্য
চাওয়ার প্রমাণ নেই এ কথাও ঠিক নয়। আমরা এ কথা বলছি এ কারণে যে, হাদীসগুলোতে প্রকাশ্যভাবে ‘আল্লাহর
বান্দা’ বলতে শুধু আমাদের উল্লেখিত ওই তিন ধরনের
সৃষ্টিকে বোঝানো হয় নি। যদি আমরা ধরেও নেই যে, শুধু ওই সব
সৃষ্টিকেই উদ্দেশ্য করা হয়েছে, তাতেও বিরুদ্ধবাদীদের অপর একটি যুক্তিকে
হাদীসগুলো খণ্ডন করে দেয়; আর তা হলো, অদৃশ্য
কারো সাহায্য চেয়ে তাকে আহ্বান করা। বিরুদ্ধবাদীরা বেসালপ্রাপ্তদের কাছে সাহায্য
প্রার্থনার চেয়ে এটিকে কোনো অংশেই কম খারাপ চোখে দেখে না এবং তাদের কাছে এরও কোনো
অনুমতি নেই”। শওকানী অদৃশ্য কাউকে
আহ্বান করার বিষয়টির বৈধতা স্বীকার করে লিখেছেন:
وَفِي
الحَدِيثِ دَلِيلِ عَلَى جَوَازِ الِاسْتِعَانَةِ بِمن لَا يَرَاهُمُ الْإِنْسَان
مِنْ عِبَادِ اللهِ مِنْ الْمَلَائِكَة وصالحي الْجِنّ وَلَيْسَ فِي ذَلِك بَأْس
كَمَا يَجُوْزُ للْإنْسَانِ أَن يَسْتَعِينَ بِبَنِيْ آَدَمَ إِذَا عَثَرَتْ
دَابَّته أَو انْفَلَتَتْ.
-
আ’ঈনূ হাদীসে প্রমাণিত হয় যে অদৃশ্য আল্লাহর
বান্দাদের কাছে সাহায্য চাওয়া বৈধ, তাঁরা ফেরেশতা হোন
আর মোমেন জিন-ই হোন; ঠিক যেমনি কারো ঘোড়া বা সওয়ার নিয়ন্ত্রণের
বাইরে বা ছুটে গেলে মানুষের সাহায্য চাওয়া অনুমতিপ্রাপ্ত । [৮]
(৫) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি
আলাইহি তাঁর রচিত ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে
বর্ণনা করেন
فَبَيْنَمَا
هُمْ كَذَلِكَ إِذْ نَادَى مُنَادٍ مِنَ السَّحَرِ يَا أَيُّهَا النَّاسُ
أَتَاكُمُ الْغَوْثُ ، ثَلاَثًا.
-
দজ্জালের ফিতনা যখন চরম আকার ধারণ করবে এবং মুসলমানবৃন্দ মহাবিপদে পড়বেন, এমতাবস্থায় হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম আলাইহিস সালাম ফজরের
নামাযের সময় অবতরণের আগ মুহূর্তে মানুষেরা একজন ঘোষককে তিনবার ঘোষণা করতে শুনবেন-‘ওহে মানুষেরা, আল্ গাউস
(সাহায্যকারী) তোমাদের কাছে আসছেন’!। [৯]
(৬) ইবনে কাসীর তাঁর ইতিহাস পুস্তক ’আল-বেদায়া ওয়ান্ নেহায়া’ -তে বর্ণনা করেন যে
খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ওমর ফরুক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু মদীনায় খরা ও দুর্ভিক্ষের
সময় মিসরে অবস্থিত হযরত আমর ইবনুল আস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও বসরায় অবস্থিত হযরত
আবু মূসা আশআরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কাছে সাহায্য চেয়ে চিঠি লিখেছিলেন যা’তে উভয়ের কাছে বলা হয়েছিল “
فَكَتَبَ
عُمَرُ إِلَى أَبِي مُوسَى بِالْبَصْرَةِ أَنْ يَا غَوْثَاهُ لِأُمَّةِ مُحَمَّدٍ.
-
ইয়া গাউসাহ লি উম্মাতি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু অলাইহিস ওয়াসাল্লাম”! অর্থাৎ, ’উম্মতে মুহাম্মদীকে
সাহায্য করুন। [১০]
এটা যদি
ইসতেগাসাহ ও ইস্তেয়ানা না হয়ে থাকে, তাহলে আর কোনটা হবে?
আয্ যাহাবী তাঁর লিখিত ফজরুস্ সাদেক পুস্তকে আরও বলেন, “ইমাম সুবকী, ইমাম কসতলানী নিজ আল্ মাওয়াহিবুল লাদুননিয়া গ্রন্থে, আস্ সামহুদী তাঁর তারিখুল মদীনা বইয়ে এবং আল্ হায়তামী তাঁর আল্ জওহারুল মুনাযযাম গ্রন্থে বলেছেন যে মহানবী সাল্লাল্লাহু অলাইহিস ওয়াসাল্লাম ও অন্যান্য নবী-রাসূল এবং পুণ্যবান আউলিয়ায়ে কেরামের সাহায্য প্রার্থনা করা হলো আল্লাহর কাছে চাওয়ার একটি মাধ্যম, যা তাঁদের উচ্চমর্যাদা ও সম্মানের ওয়াস্তে চাওয়া হয় (বে-জাহেহীম)। প্রার্থনাকারী প্রার্থনা-কবুলকারী খোদাতা’লার কাছে ওসীলা বা মধ্যস্থতাকারীর উচ্চমর্যাদার ওয়াস্তে সাহায্য চান। প্রকৃতপক্ষে যার কাছে চাওয়া হয় তিনি আল্লাহ্ তা’লা । মহানবী সাল্লাল্লাহু অলাইহিস ওয়াসাল্লাম ওয়াসিতা (মাধ্যম, বাহন)-মাত্র। অতএব, সাহায্য এটির সৃষ্টিতে (খালকান) ও অস্তিত্বে (ইজাদান) মূলতঃ খোদা তা’লা থেকে নিঃসৃত। আর মহানবী সাল্লাল্লাহু অলাইহিস ওয়াসাল্লাম-এর সাহায্য তাসাব্বুবান (কারণ) এবং কাসবান (খোদা প্রদত্ত)।
“সাধারণ মানুষেরা আরবীতে যে বলেন ইয়া আবদাল কাদের আদ্রিকনী (হে বড় পীর দস্তগীর, আমার দিকে কৃপার দৃষ্টি দিন), অথবা
ইয়া বদবী, আল্ মদদ (হে আহমদ বদবী, সাহায্য করুন), এসব কথা মাজাযী বা
রূপক অর্থে ধরে নিতে হবে - যেমনিভাবে বলা হয় ‘এ খাবার আমায়
পরিতৃপ্ত করেছে’, অথবা ‘এ পানি আমার তৃষ্ণা
মিটিয়েছে’, কিংবা ‘এ ওষুধ
আমাকে আরোগ্য দিয়েছে’। খাদ্য বা পানি খিদে বা তেষ্টা মেটায় না। আর ওষুধও আরোগ্য
দেয় না। বরং যিনি এগুলো করে থাকেন তিনি আল্লাহ্ তা’লা স্বয়ং। খাদ্য, পানি ও ওষুধ হলো তাঁর সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় কারণ, মাধ্যম ও বাহনমাত্র।”
শায়খ
খায়রুদ্দীন রমলী রহমতুল্লাহি আলাইহি-কে ফতোওয়ায়ে খায়রীয়া (পৃষ্ঠা ১৮০-১৮১)-তে
জিজ্ঞেস করা হয় সেইসব মানুষ সম্পর্কে যারা ভাবোন্মত্ত হয়ে ওয়াজদ (দেহ স্পন্দন)
করেন এবং বলেন- “হে শায়খ আবদুল কাদের! অথবা ‘হে শায়খ আহমদ বদবী’! কিংবা ‘হে শায়খ রেফায়ী! আল্লাহর ওয়াস্তে আমাদের অমুক বস্তু দিন (
শাইয়্যান লিল্লাহ)। শায়খ রমলী রহমতুল্লাহি আলাইহি জবাবে বলেন,
بِأَنَّ الِاسْتِغَاثَةَ
بِالْأَنْبِيَاءِ وَالْمُرْسَلِينَ وَالْأَوْلِيَاءِ وَالْعُلَمَاءِ
وَالصَّالِحِينَ جَائِزَةٌ وَلِلرُّسُلِ وَالْأَنْبِيَاءِ وَالْأَوْلِيَاءِ
وَالصَّالِحِينَ إغَاثَةٌ بَعْدَ مَوْتِهِمْ؛ لِأَنَّ مُعْجِزَةَ الْأَنْبِيَاءِ
وَكَرَامَاتِ الْأَوْلِيَاءِ لَا تَنْقَطِعُ بِمَوْتِهِمْ. أَمَّا الْأَنْبِيَاءُ
فَلِأَنَّهُمْ أَحْيَاءٌ فِي قُبُورِهِمْ يُصَلُّونَ.
-
নিশ্চয় নবী, রাসূল, ওলী ও (হক্কানী) আলেমগণের মধ্যস্থতায় ‘সাহায্য প্রার্থনা’ করা বৈধ। আর নবী/রাসূল/আউলিয়াবৃন্দ বেসালের পরও সাহায্য করে থাকেন, কেননা নবীবৃন্দের মু‘জিযা ও ওলীমণ্ডলীর কারামত বেসালের পরও রহিত হয়না। নবীবৃন্দ জীবিত রয়েছেন, তাঁরা আপন রওযায় নামায আদায় করে থাকেন।[১১]
প্রথমেই
জেনে রাখো, ইমামগণের বইপত্রে সর্বজনবিদিত যে নিয়ম
চালু রয়েছে, তা হলো সকল কর্ম তার নিয়্যত বা উদ্দেশ্য দ্বারা বিবেচিত হবে। সহীহ
বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে إِنَّمَا الأَعْمَالُ
بِالنِّيَّاتِ ‘নিশ্চয় আমল বা কর্ম নিয়্যত তথা অন্তরের উদ্দেশ্যের ওপর
নির্ভরশীল’। [১২] আর কেউই সূফীবৃন্দের বাস্তবতাকে অস্বীকার করেন না, একমাত্র অজ্ঞ-মূর্খ এবং বোকা ব্যক্তিবর্গ ছাড়া”। আল্লাহ্ তা’লাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
তথ্যসূত্র
[১] আল
কুরআন : আল ক্বাসাস : ২৮:১৮।
[২] আল
কুরআন : আল কাহাফ : ১৮:৯৫।
[৩] বুখারী : আস সহীহ, ৪:১৪২ হাদীস নং ৩৩৬৪।
(ক) আব্দুর রাযযাক : আল মুসান্নাফ, বাবু
বুনিয়াল কা‘বা, ৫:১০৫ হাদীস নং ৯১০৭।
(খ) বায়হাকী : শু‘য়াবুল ঈমান, ৫:১৬০ হাদীস
নং ৯৩৭০।
[৪] ত্ববরানী : আল মু‘জামুল কাবীর, ১৭:১১৭ হাদীস নং ২৯০।
(ক) আবু ইয়ালা : আল মুসনাদ, ৫:১৪২ হাদীস নং ২৭৫৬।
[৫] হায়সামী : আল
মাজমাউয যাওয়ায়িদ, ১০:১৩২ হাদীস নং ১৭১০০।
[৬] বায়হাকী : শু‘য়াবুল ঈমান, ১০:১৪০ হাদীস নং ৭২৯৭।
[৭] ইবনে আবী শায়বা : আল মুসান্নাফ, ৬:৯১ হাদীস নং ২৯৭২১।
[৮] শাওকানী :
তোহফাতুয-যাকেরীন, ফাসলুস সফর ১:২৩৮।
[৯] আহমদ : আল মুসনাদ, ৪:২১৬ হাদীস নং ১৭৯৩১।
(ক) ইবনে আবী শায়বা : আল মুসান্নাফ, ৭:৪৯১ হাদীস নং ৩৭৪৭৮।
(খ) তবরানী : আল মু‘জামুল কাবীর, ৯:৬০ হাদীস নং ৮৩৯২।
(গ) হাকিম : আল মুস্তাদরাক, ৪:৪৭৮ হাদীস নং ৮৪৭৩।
[১০]
ইবনে কাসির : আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, সানাতু ছামানিয়াতু আশর ৭:৯১।
[১১] রমলী : আল ফাতওয়া, ৪:৩৮২।
[১২] বুখারী : আস সহীহ, ১:৬ হাদীস নং ১।
(এ লেখাটি www.sunnah.org/aqidah/madad.html ওয়েবসাইট থেকে ভাষান্তর করা হয়েছে)
No comments:
Post a Comment